মো:আল আমিন গাজী,শ্যামনগর প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কৃষক নেতৃত্বে ধান জাত গবেষণায় স্থানীয় ১৬২টি জাতের আমন ধানের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের মধ্য কৈখালী গ্রামে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও মধ্য কৈখালী আইপিএম কৃষি ক্লাব এই মাঠ দিবসের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে স্থানীয় কৃষকেরা গবেষণাধীন ধান জাতের প্লট পরিদর্শন করেন এবং জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা সহনশীল, পোকামাকড়ের আক্রমণ কম, সারের ব্যবহার কম, ধানের ঘন গাঁথুনি, লম্বা শীষ, চিকন দানা ও সুগন্ধসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে জাত নির্বাচন করেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ধানের জাত হলো- আরমান, স্বর্ণমাশুরী, নারকেল মুচি, চিনিকানি, দারশাইল, তালমুগুর, মালাগেতী, দিশারী, নেপালি, পিঁপড়ার চোখ, সীতাভোগ, পাটনাই প্রভৃতি।
শ্যামনগর গ্রীন কোয়ালিশনের সভাপতি কৃষ্ণান্দ মুখার্জির সভাপতিত্বে মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাজমুল হুদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৫নং কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম ও শিক্ষক-সাংবাদিক রনজিৎ বর্মণ।
স্থানীয় জাত সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বারসিকের সহযোগী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, কৃষক নেতা লোকনাথ মন্ডল, নিমাই মন্ডল, হাবিবুর রহমান, কৃষাণী নাজমুন নাহার, ভগবতী রানী, লুৎফর রহমান।
তারা বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতার কারণে ধান চাষ এক প্রকার চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। একসময় এ অঞ্চলে বহু স্থানীয় ধানের সমাহার থাকলেও এখন হাইব্রিড ও উফশী জাতের উপর নির্ভরতা বেড়ে গেছে। স্থানীয় ধানের বহু জাত বিলুপ্তির পথে। এসব হারিয়ে যাওয়া ধানের জাত পুনরুদ্ধার, সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ প্রয়োজন। কারণ স্থানীয় জাতগুলো হলো মা জাত। আগামীতে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য নতুন জাত উদ্ভাবনে স্থানীয় জাতগুলোই হবে মূল ভিত্তি।
কৃষক নিমাই মন্ডল বলেন, হাইব্রিড ও উফশী ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানা সরকারি উদ্যোগ থাকলেও স্থানীয় জাত সংরক্ষণে তেমন উদ্যোগ নেই। খাদ্য নিরাপত্তা ও জলবায়ু সহনশীল কৃষির জন্য স্থানীয় জাত রক্ষা করা অপরিহার্য।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply